1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

জ্বালানি তেল, গাড়িভাড়া ও ইউরিয়া সারের মূল্য বৃদ্ধিতে মৌলভীবাজার এনডিএফ’র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০২২
  • ১৫৫ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্ট :: ৮ মাসের মধ্যে সকল ধরনের জ্বালানি তেলের রেকর্ড মূল্য বৃদ্ধি, গাড়িভাড়া তথা পরিবহণ ব্যয় বৃদ্ধি ও ইউরিয়া সারের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ মৌলভীবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে ০৮ আগষ্ট শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের চৌমুহনাস্থ কার্যালয় হতে শুরু হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি কোর্টরোড, চৌমুহনা, শমসেরনগর রোড প্রদক্ষিণ করে পুণরায় দলীয় কার্যালয়ে এসে সমাপ্ত হয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যা ৬ টায় দলীয় কার্যালয়ে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা কমিটির অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সোহেল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ ছাদেক মিয়া ও মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা, মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া, মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মোঃ গিয়াসউদ্দিন, শ্রমিকনেতা মোঃ জামাল মিয়া, আলআমিন, মোঃ জসিমউদ্দিন প্রমূখ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন চাল-ডাল, তেল-লবন-চিনি, মাছ-মাংস, ডিম-দুধ, শাক-সবজিসহ দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কষাঘাতে জর্জরিত জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস উঠছে। গরীব মানুষ যে লবন-কাঁচামরিচ দিয়ে খাবে সেই উপায়ও নেই, কাঁচা মরিচের দামও ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। এরকম সময়ে সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্তে জ্বালানি তেল ও পরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধি সাধারণ জনগণের কাছে ‘মরার উপর খাড়ার ঘাঁ’ হয়ে এসেছে। জ্ঝালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে সরকার যুক্তি হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারদরের সাথে সমন্বয়, বিপিস প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা লোকসান এবং ভারতে তেল পাঁচার রোধ করার কথা বলছে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য প্রতি ব্যারেল ১২৫ ডলার থেকে প্রায় ৯০ ডলারে নেমে নি¤œমূখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত ৬ মাসের মধ্যে জ¦ালানি তেলের মূল্য সর্বনি¤œ পর্যায়ে নেমে এসেছে। সরকার গত ৬ মাসে বিপিসির লোকসানের কথা বললেও ২০১৪-২০২১ সালে ৭ বছরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের রেকর্ড দর পতনের সময়ে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য না কমানোতে বিপিসি প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। সেই মুনাফা ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করলেও আগামী অন্তত ৩ বছর জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রয়োজন পড়তো না। সরকারের ভারতে তেল পাঁচার রোধের যুক্তি হাস্যকর। কারণ জ্বালানি তেল সংরক্ষণ করা হয় সুরক্ষিত এলাকায় এবং জ্বালানি তেল পরিবহণও হয় বিশেষ ব্যবস্থাপনায়। তাছাড়া জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশ, সেনাবাহিনী তাহলে কি কাজ করে? যদি জ্বালানি তেল পাঁচার হয়েই থাকে তাহলে সরকারের উচিত পাঁচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, কোনভাবেই সরকারের ব্যর্থতার দায় জনগণের ঘাড়ে চাপানো যায় না। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমা সত্ত্বেও সরকার সাম্রাজ্যবাদী সংস্থা আইএমএফের ঋণের শর্ত পূরণে জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে। সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার বাজেট বাস্তবায়নে দেশী-বিদেশী ঋণ গ্রহণ করে মেগা প্রকল্পের দ্বারা অবাধ লুটপাটের মাধ্যমে জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। মূলত আইএমএফের ঋণের শর্ত মেনে দেশ পরিচালনার মধ্যেই নিহিত আছে নয়াউপনিবেশিক দেশের রাষ্ট্রের চরিত্র। সরকার প্রধান বলছেন দেশে রিজার্ভের ঘাটতি নেই, তাহলে কেন আইএমএফের ঋণের শর্ত মেনে নিতে হলো? ইতোমধ্যে ইউরিয়া সারের মূল্য কেজিতে ৬ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সার ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে চলতি আমন মৌসুমে বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ বাড়বে কমপক্ষে এক হাজার টাকা, যার অবশ্যম্ভাবী প্রভাব পড়বে ধান-চালের বাজারে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেলের মূল্য ও নিত্যপণ্যের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধি করে শ্রমিক, শ্রমজীবী, স্বল্প আয়ের মানুষ ও ব্যাপক জনগণের জীবন ও জীবিকাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রেই লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি ঘটলেও শ্রমিক-কৃষক-জনগণের আয় বাড়েনি। সরকার জনগণের জীবন ও জীবিকাকে উপেক্ষা গ্যাস-বিদ্যুত-জ্বালানিসহ সকল ক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। জ্বালানিতেলের পর সরকার আবারও গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। অথচ সরকার কালোটাকা ও বিদেশে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। অর্থনীতি সমিতির প্রকাশিত এক তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে দেশে কালোটাকা প্রায় ৮৯ লাখ কোটি টাকা এবং বিদেশে পাচার হয়েছে ৮ লাখ কোটি টাকা।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন সমগ্র পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা এক গভীর ও সামগ্রিক সংকট, দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ, মুদ্রাযুদ্ধ, আঞ্চলিক ও স্থানিক যুদ্ধের প্রক্রিয়ায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি চলছে। বিশ্ব বাজার বন্টন পুনর্বন্টন নিয়ে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্বে সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো যে যুদ্ধ প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে ধারাবাহিক তৎপরতা চালাচ্ছে তারই প্রতিফলন ঘটছে ইউক্রেনে আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে। এই যুদ্ধের লক্ষ্য হচ্ছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্ব গঠিত সামরিক জোট ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণ নীতি মোকাবেলা করে রাশিয়ার স্বীয় লক্ষ্য হাসিল করা। অন্যদিকে তাইওয়ান স্বাধীনতার ইস্যু নিয়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও বৃহত সাম্রাজ্যবাদের লক্ষ্যে অগ্রসরমান পুঁজিবাদী চীনের মুখোমুখি অবস্থান ও তাইওয়ান স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে তাকে চীনের রেড লাইন ঘোষণা বিশ্ব পরিস্থিতিকে উত্তেজনাকর করে তুলেছে। আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে বিশ্বযুদ্ধের সম্ভবনা মূর্ত হয়ে উঠেছে। সাম্রাজ্যবাদীরা জোরদার করছে সর্বাত্মক যুদ্ধ প্রস্তুতিকে। তাদের এই যুদ্ধ প্রস্তুতি থেকে আমাদের দেশও মুক্ত নয়। ভূ-রাজনৈতিক ও রণনীতিগত গুরুত্বের প্রেক্ষিতে ভারতীয় উপমহাদেশ তথা বাংলাদেশকে নিয়েও আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্বন্দ্ব সুতীব্র। একই সময়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মার্কিনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর তাই তাৎপর্যপূর্ণ। বক্তারা বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, যুদ্ধ উন্মদনার বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং জাতীয়-জনস্বার্থ বিরোধী সকল অপতৎপরতার বিরুদ্ধে জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রাম লক্ষ্যে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা দালালপুঁজি বিরোধী সকল দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..